সমাজ থেকে জঞ্জাল দূর করার জন্যই ব্লু হোয়েল গেমটি বানিয়েছি - ফিলিপ বুদেকিন
ফিলিপ বুদেকিন |
বিগত কয়েক বছর ধরেই অনলাইন গেম রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে অভিভাবকদের কাছে। শুধু অভিভাবকরাই নন, অনলাইন গেমের প্রতি তরুণ প্রজন্মের আসক্তি চিন্তা বাড়িয়েছে মনোবিজ্ঞানী এবং সমাজবিজ্ঞানীদেরও। শিশুদের বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশের ক্ষেত্রেও নাকি অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই গেমের নেশা। অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বাড়ছে দুর্ঘটনাও। আর অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা।
ইদানীংকালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে একাধিক দুর্ঘটনা এবং আত্মহত্যার ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’ নামের একটি সোশ্যাল গেমিং-এর। পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন মাসে রাশিয়া এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় মোট ১৬ জন তরুণীর আত্মহত্যার খবর পেয়েছিল পুলিশ। এদের মধ্যে সাইবেরিয়ার দুই স্কুলছাত্রী য়ুলিয়া কনস্তান্তিনোভা (১৫) এবং ভেরোনিকা ভলকোভা (১৪) একটি বহুতলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। তদন্তে নেমে পুলিশের নজরে আসে এই ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’। এই গেমে প্রতিযোগীদের মোট ৫০টি আত্মনির্যাতনমূলক লেভেল কমপ্লিট করতে হতো। ভয়ঙ্কর ছিল সেই সমস্ত লেভেল ও তার টাস্কগুলি। গেমের শুরুর টাস্কগুলি অবশ্য তেমন ভয়ঙ্কর নয়। বরং বেশ মজারই। আর সেই কারণেই এই গেমের প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হচ্ছে কিশোর-কিশোরীরা। কিন্তু গেমের লেভেল যত এগোয়, ততই ভয়ঙ্কর হতে থাকে টাস্কগুলি।
এই টাস্কগুলিতে অংশগ্রহণের পর সেই ছবি পোস্ট করতে হয় এর গেমিং পেজে। প্রতিযোগিতার একেবারে শেষ পর্যায়ে, অর্থাৎ ৫০তম টাস্কের শর্তই হল আত্মহনন। পুলিশের অনুমান, সাম্প্রতিক কালে আত্মঘাতী ১৬ জন তরুণীই এই গেমের ৫০তম টাস্কের শর্ত অনুযায়ী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিল। রাশিয়া পুলিশের আশঙ্কা, সাম্প্রতিক কালে গোটা বিশ্বে আত্মঘাতী হওয়া অন্তত ১৩০ জনের আত্মহননের পেছনে রয়েছে এই ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, এই গেমিং অ্যাপ মোবাইলে একবার ডাউনলোড হয়ে গেলে তা আর কোনও ভাবেই ডিলিট করা সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, ওই মোবাইলে ক্রমাগত নোটিফিকেশন আসতে থাকে যা ওই মোবাইলের ইউজারকে এই গেম খেলতে বাধ্য করে।
তদন্তে নেমে দিন কয়েক আগেই পুলিশ হদিস পায় এই গেম-এর পেজ অ্যাডমিন-কে। নাম ফিলিপ বুদেকিন, বয়স ২১ বছর। ফিলিপ রাশিয়ারই বাসিন্দা। সে ভিকোন্তাক্তে নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় চালাত তার এই মারাত্মক গেম। ইতিমধ্যেই ফিলিপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের জেরায় এই গেম চালানোর কথা স্বীকারও করেছে সে। কিন্তু কোনও ভাবেই এই কাজকে অপরাধ বলে মানতে নারাজ ফিলিপ। তার মতে, সমাজে যাঁদের বেঁচে থাকা উচিত নয়, সে তাঁদেরকেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফিলিপ আপাতত সেন্ট পিটার্সবার্গের ক্রিস্টি জেলে বন্দি। বর্তমানে ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’টি রাশিয়ার গণ্ডী পেরিয়ে ব্রিটেনের তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যা চিন্তা বাড়িয়েছে ইউরোপের একাধিক মনোবিজ্ঞানী এবং সমাজবিজ্ঞানীর।
কুলাউড়া নিউজ ২৪ মানে বিশ্বস্থ ও নিশ্চিত সূত্রে প্রাপ্ত দেশ বিদেশের খাঁটি সংবাদ। সত্য প্রকাশে নির্ভীক কুলাউড়া বাসি ।
ReplyDeletekulaura news , all bangla newspaper , breaking news